বাংলা শস্য বীমা যোজনা আবেদন | শস্য বীমা ফরম ফিলাপ 2021-22

 আপনি কি কোনদিন Bangla Shasya Bima yojana লাভ পেয়েছেন বা এই বীমা লাভ পাওয়ার জন্য কোন দিন আবেদন করেছিলেন? আজকে আমরা আলোচনা করব "বাংলা শস্য বীমা যোজনা" কি, কাকে বলে, শস্য বীমা ফরম, স্ট্যাটাস কি করে দেখবেন।

বাঙালি চাষীদের টাকা রোজগার বা  আয় করার মূল উৎস কৃষিকাজ। যদি ওই কৃষকরা চাষ বাস করার পরপ্রাকৃতিক দুর্যোগে ফসল নষ্ট হয়ে যায় তাহলে টাকা রোজগার টা বন্ধ হয়ে যায়। অনেক চাষী আছে ফসল নষ্ট কারণে ব্যাংকের লোন শোধ করতে পারে না এবং অনেক চাষি রয়েছে একদম ভেঙে পড়ে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মাননীয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়  তিনি কৃষকের ফসল রক্ষা করার জন্যবীমা আবাস যোজনা নিয়ে এসেছে  যার নাম বাংলা শস্য বীমা যোজনা।

Bangla Shasya Bima yojana abedan

বাংলা শস্য বীমা কি?

বাংলায় যে শস্য গুলো রোপন করা হয়, সেই শস্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে ক্ষতি হয়ে যায়। এই শস্য ক্ষতি হওয়ার আগে বিমা ইন্সুরেন্স করা হয়। যাতে এই দুর্যোগে যদি আপনার ফসল ক্ষতি হয়ে যায় তাহলে আপনি মোটামুটি পরিমাণের টাকা পাবে। একই মাটি সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিয়ে রাখে পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবং সম্পূর্ণ ফ্রিতে। 

শস্য বীমা কাকে বলে?

পশ্চিমবঙ্গ সরকার দ্বারা কৃষকদের ফসল প্রাকৃতিক দুর্যোগের নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে যে ক্ষতি হয়, তার বীমা স্বরূপ সরকার কৃষকের জন্য যে অর্থ ব্যয় করে এক কথায় তাকে বাংলা শস্য বীমা বলে। এই বীমার মাধ্যমে কৃষকরা কোন টাকা খরচা না করে পেয়ে থাকে।

বাংলা শস্য বীমা কোন ফসলের উপর হয়ে থাকে?

আমাদের পশ্চিমবঙ্গে সব ধরনের চাষাবাদ হয়ে থাকে। যার মধ্যে কয়েকটি প্রশ্ন রয়েছে যেগুলো আপনার বীমা করতে পারেন। পশ্চিমবঙ্গ এসব ফসলের উপর শস্য বীমার নির্দেশ দিয়েছে, ধান, গম, মুসুর, সরিষা, তিল, চীনাবাদাম,আখ ও আলু চাষের জন্য এই বীমা হয়ে থাকে। কোন চাষী যদি এইসব চাষ করে থাকেন তাহলে আপনি অবশ্যই শস্য বীমার লাভ  পেতে পারেন।

শস্য বীমার প্রেমিয়াম কি চাষের উপর হয়?

বাংলায় এমন দুটো প্রশ্ন রয়েছে যদি আপনি এই ফসল চাষ করে থাকেন তাহলে আপনি শস্য বীমা করালে আপনাকে প্রিমিয়াম ভরতে হবে। আপনি যদি আলু ও আখ চাষ করে থাকেন তাহলে আপনাকে 4.95% প্রিমিয়াম ভাবতে হবে। শুধুমাত্র এই দুটো ফসলের জন্য ধার্য হবে।

শস্য বীমা নষ্ট ফসলের টাকার পরিমান কত?

যদি আপনার ফসল 75% পার্সেন্ট পর্যন্ত নষ্ট হয় তাহলে আপনি দিমা অনুযায়ী সর্বাধিক 25% পার্সেন্ট পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ পেতে পারে কৃষকরা। আপনার যদি পার্বত্য এলাকার কৃষকরা শস্য বীমা করে থাকে আপনার যদি75% পার্সেন্ট পর্যন্ত ফসল যদি নষ্ট হয়ে যায় তাহলে আপনি 50% পার্সেন্ট পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ পেতে পারেন।

 বাংলা শস্য বীমা যোজনা আবেদন কিভাবে করবে?

বাংলা শস্য বীমা যোজনা লাভ পেতে গেলে আপনাকে প্রথমে আবেদন করতে হবে। আপনিযদি আবেদন করতে চাইছেন তাহলে আপনি অফলাইনে আবেদন করার চেষ্টা করবেন। অফলাইনে আবেদন করার জন্য আপনার স্থানীয় কৃষি দপ্তর কিংবা অঞ্চল অফিসে গিয়ে ফরম সংগ্রহ করে সম্পূর্ণ তথ্য সঠিকভাবে দিয়ে জমা করতে পারেন।

বাংলা শস্য বীমা ফরম কিভাবে ফিলাপ পূরণ করব?

বাংলা শস্য বীমা ফরম ফিলাপ করার জন্য আপনাকে প্রথমে ফর্ম সংগ্রহ করতে হবে। এই ফরমটি পাওয়ার জন্য আমরা স্থানীয় কৃষি দপ্তর কিংবা অঞ্চল অফিসে পেয়ে যাবেন। এই ফর্মের প্রথমেই লেখা থাকবে বাংলা শস্য বীমা ( BSB)

 • ফর্মটির এক প্রান্তে  কৃষকের নাম, বয়স, লিঙ্গ, জাতি এইগুলো আপনারা ঠিকঠাক ভাবে পূরণ করে নেবেন।

• অন্যপ্রান্তে কৃষকের বাবার নাম, কৃষকের ভোটার কার্ডের নাম্বার এবং মোবাইল নাম্বারটি দিবেন।

• তিন নম্বর স্টেপে পূরণ করতে হবে কৃষকের ঠিকানা: মৌজা বা গ্রাম, গ্রাম পঞ্চায়েত, ব্লক, জেলা, কেওয়াইসি আছে হ্যাঁ কি না, কৃষক বন্ধু আইডি নাম্বার টি যোগ করে দেবেন।

•  ফসল বীমার জন্য জায়গার বিবরণ নিচে ঘর গুলিতে সঠিকভাবে বসাবেন। 1ম ঘরটিতে রয়েছে ফসলের নাম, 2য় ঘরটিতে রয়েছে  যেসব ব্লকের মধ্যে জায়গা গুলি রয়েছে সেই ব্লকের নাম। 3য় যে রয়েছে সেটা কোন গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত সেটা লিখে দিবেন। 4থ ঘরটিতে মৌজার নাম এবং জে এল নাম্বার বসাবেন। 5ম আপনার জায়গার দাগ নাম্বার বসাবেন। 6ঠ চাষযোগ্য এলাকা শতক হিসাবে লিখে দেবেন। 7ম বীমার জন্য প্রস্তাবিত এলাকা বিবরণ। 8ম নিজস্ব বা ভাগ চাষের বিবরণ দিবেন। 9য় ফসল রোপনের তারিখ দিবেন। 10য় আপনার প্রস্তাবিত বীমার রাশি বসিয়ে দিবেন।

•  একটু নিচের দিকে দেখতে পাবেন সাক্ষী সহি এবং কৃষকের সহি বা আঙ্গুলের টিপ দিতে হইবে।

 • তারপরে স্টেপ যেটা রয়েছে কৃষকের নাম, ব্যাঙ্কের নাম, ব্যাঙ্কের সাকার নাম, ব্যাঙ্কের IFSC cod, একাউন্ট নাম্বার বসাবেন।

• প্রাপ্তি স্বীকার য়েটা রয়েছে ওইখানে ফাঁকা ঘরে আপনার এলাকার কৃষি দপ্তরে অফিসের সহি সহ ফরম পূরণ করে জমা নেবে। 

বাংলা শস্য বীমা যোজনা কি নথিপত্র লাগবে।

 শস্য বীমা নাম নথিভুক্ত করার জন্য  এই ডকুমেন্টগুলো আপনাকে প্রদান করিতে হইবে। নিচে নিম্নলিখিত ডকুমেন্টগুলি আপনাকে দিতে হইবে। 

• ভোটার কার্ডের এক কপি জেরক্স (বাধ্যতামূলক)

• আধার কার্ডের এক কপি জেরক্স।

• ব্যাংকের পাস বইয়ের জেরক্স (ছবি সমেত) দিতে হইবে।

•  পাস বই এর ছবি সমেত ব্যাংক একাউন্ট নাম্বার লাগবে।

• সাম্প্রতিক খতিয়ান বা পর্চা জেরক্স (বাধ্যতামূলক)

• যদি আপনি ভাগচাষী হয়ে থাকেন জমি অধিকার সংক্রান্ত তথ্য এবং আপনার এলাকার গ্রাম পঞ্চায়েতের বা প্রধানের সই লাগবে।

• আপনার এলাকায় কৃষি অধিকারী দের শস্য রোপনের সংশয় পত্র সঙ্গে সহি লাগিবে। 

এইসব তথ্যগুলো বাংলা শস্য বীমা যোজনা অবশ্যই লাগবে।

বাংলা শস্য বীমা চেক করবেন কিভাবে?

যদি আপনারা Bangla Sasya Bima Status check করতে চাইছেন তাহলে আপনি অনলাইনে অতি সহজে চেক করতে পারবেন। পশ্চিমবঙ্গে এর অফিশিয়াল ওয়েবসাইট বাংলা শস্য বীমা ডটনেট এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আপনারা আপনাদের  শস্য বীমার টেটাস চেক করতে পারবেন। যদি আপনারা চেক করতে চাইছেন তাহলে এখানে ক্লিক করে Sasya Bima Status check দেখতে পারেন। সোজা পৌঁছে দেবে আপনাকে এর অফিসিয়াল সাইটে এবং আপনি Bangla Shasya Bima voter ID নাম্বার দিয়ে আপনার টাটা স্টিল চেক করতে পারেন।

আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন Bangla Shasya Bima সম্বন্ধে যাবতীয় তথ্য এবং "বাংলা শস্য বীমা যোজনা" কি কাকে বলে, শস্য বীমা ফরম, স্ট্যাটাস কি করে দেখতে হয় তার সম্পূর্ণ তথ্য আপনারা আশাকরি বুঝতে পেরেছেন। আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

Banglabhumi by Ram

Previous
Next Post »